রাজশাহীর মহানগরীর বেলপুকুর এলাকা থেকে ০১ মহিলা সদস্য সহ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলাম এর ০৫ জন সক্রিয় সদস্য গ্ৰেফতার |

প্রকাশিত : চাঁপাই প্রতিদিন নিউজ


রাজশাহী মহানগরীর বেলপুকুর এলাকা থেকে ০১ জন মহিলা সদস্যসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলাম এর ০৫ জন সক্রিয় সদস্য বিদেশী পিস্তল, ম্যাগাজিন, গুলি, উগ্রবাদী বই ও উগ্রবাদী হ্যান্ডনোটসহ র‌্যাব-৫, রাজশাহী কর্তৃক গ্রেফতার।

১।  এলিট ফোর্স র‌্যাব তার সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ এর বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলস ভাবে কাজ করে আসছে। র‌্যাবের কর্ম তৎপরতার কারনেই সারাদেশে একযোগে বোমা বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন সময়ে নাশকতা সৃষ্টিকারী জঙ্গি সংগঠন সমূহের শীর্ষ সারির নেতা থেকে বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীদেরকেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা সম্ভবপর হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে, কেউ কেউ বিভিন্ন মেয়াদের কারাভোগ করেছে এবং বেশ কিছু মামলা এখনো বিচারাধীন। উল্লেখ্য যে, সাংগঠনিকভাবে পূর্বের মতো সারাদেশে একযোগে নাশকতা সৃষ্টি করাসহ পরিকল্পিতভাবে কোথাও বোমা বিস্ফোরণের সক্ষমতা না থাকলেও, যে সকল জঙ্গি এখনো আত্মগোপন করে আছে তাদের তৎপরতা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। তবে র‌্যাবের কঠোর গোয়েন্দা নজরদারী ও অভিযানের ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেতা কর্মীরা পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালিয়েও বার বার ব্যর্থ হয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে আটক হয়েছে। 

২।  গত ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বেলপুকুর থানাধীন রহমান জুট মিলের ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক লুণ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে র‌্যাবের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে জানা যায় যে, জঙ্গি ডাঃ মিজান @ দর্জি মিজান @ সামিদ, জঙ্গি বাবর আলী সহ আরো কতিপয় জঙ্গি সদস্য উক্ত টাকা সংগঠনের তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে লুণ্ঠন করে। এরপর র‌্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৫ এর একটি আভিযানিক দল ২০১৭ সালে রাজশাহীতে অভিযান পরিচালনা করে ১। মোঃ বাবর আলী, ২। মোঃ শহীদুল ইসলাম, ৩। মোঃ নজরুল ইসলাম মোল্লা ৪। মোঃ আনিছুর রহমান এবং ৫। মোঃ শাহীন গং’দেরকে গ্রেফতার করে এবং তৎকালীন পুঠিয়া (বর্তমানে বেলপুকুর, আরএমপি) থানার মামলা নং-১১, তারিখ ০৭/১০/১৭ ইং ধারা-সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩) এর ৮/৯(৩)/১০/১১ রুজু হয়। উক্ত অভিযানের সময় জঙ্গি সদস্য আনিসুর রহমান @ সাদ্দাম, মামুন-উর-রশিদ, আবু তালহা, রুহুল আমিনসহ আরো বেশ কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃতদের প্রদত্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা অনুসন্ধানের মাধ্যমে লুণ্ঠনের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। এ প্রেক্ষিতে র‌্যাবের গোয়েন্দা দল পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। 

৩।  এরই ধারাবাহিকতায় অতি সম্প্রতি র‌্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, উপরোল্লিখিত পলাতক জঙ্গি সদস্যরা নিজ এলাকায় এসে জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেছে এবং বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালানোর উদ্দেশ্যে রাজশাহী মহানগরীর বেলপুকুর এলাকায় সংগঠিত হচ্ছে। এরূপ তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৫ এর একটি আভিযানিক দল গত ৩০ জুন ২০১৯ তারিখ ০১:১৫ ঘটিকা হতে ০৫:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরীর বেলপুকুর থানাধীন ভরুয়াপাড়া ও ক্ষুদ্র জামিরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলাম এর সক্রিয় সদস্য ১। মোছাঃ আফরোজা বেগম (৫৫), স্বামী-মোঃ আনছার আলী, ২। মোঃ আনিসুর রহমান @ ছাদ্দাম (৩০), পিতা-মোঃ আনছার আলী, ৩। মোঃ রুহুল আমিন (৩১), পিতা-মোঃ আজিজুল ইসলাম, সর্ব সাং-ভরুয়াপাড়া, ৪। মোঃ মামুনুর রশিদ (৩৫), পিতা-মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাং-ভরুয়াপাড়া (দহপাড়া) এবং ৫। মোঃ আবু তালহা (২১), পিতা-মোঃ সিদ্দিক তালহা, সাং-ক্ষুদ্র জামিরা, সর্ব থানা-বেলপুকুর, জেলা-রাজশাহী’দেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে ০১ টি ৭.৬৫ মিঃ মিঃ বিদেশী পিস্তল, ০২ টি ম্যাগাজিন, ০৫ রাউন্ড গুলি, ২৪ টি ককটেল, ১০ টি উগ্রবাদী বই, ০৮ টি উগ্রবাদী হ্যান্ডনোট, ০১ টি চাঁদা আদায়ের রশিদ, ০৩ টি জাতীয় পরিচয়পত্র, ০২ টি মোবাইল সেট, ০৪ টি সীমকার্ড এবং ০১ টি মেমোরী কার্ড উদ্ধার করা হয়। 

৪।  গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ০৫ জন আসামী সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘‘আনসার-আল-ইসলাম’’ এর সক্রিয় সদস্য। পূর্বে তারা জঙ্গি সংগঠন জেএমবি’র সাথে সংযুক্ত ছিল। তারা পরস্পর যোগসাজসে, সহায়তায়, সমর্থন দিয়ে সংবদ্ধভাবে উল্লিখিত এলাকায় দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ডের ষড়যন্ত্র করতঃ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার উৎখাতের জন্য যুব সমাজকে উৎসাহ ও প্ররোচনা দান করে আসছে এবং তাদের সংগঠনের জন্য কর্মী সংগ্রহের পাশাপাশি নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিতর্কিত উগ্রবাদী বই, অস্ত্র-গুলি, ককটেল, বিস্ফোরক ও অন্যান্য আলামতসহ ঘটনাস্থলে অবস্থান করে। এসময় র‌্যাব উল্লিখিত আসামীদের’কে গ্রেফতার করে। 

৫। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

র‍্যাব-কে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন।
জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ুন।

Comments

Popular posts from this blog